‘দীর্ঘ পথ জুড়ে হাসছে কাঁটা
বন
হা করে আছে আজ আমাকে কাটবে।
পেরুলে দেবে ফল অমরাবতী
সে
খুলে পা রাখলাম রক্ত বিষে…’
চার-পাঁচ লাইনের এই ছোট
লেখাটি নিয়ে যে আমি মোটেও খুশি নই, তা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রঘুদা ঠিক বুঝে নিয়েছেন।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।
মাঠের মাঝ বরাবর কাঁচা রাস্তার উঁচু-নিচু দিয়ে টোটো ফিরছে। রঘুদা বললেন, ‘এর মধ্যে
শিলিগুড়ি প্রমাদের ওখানে যাব, পারলে দেখা করিস’। সারাটা বিকেল আমি চুপ করে ছিলাম।
হঠাৎ উনি ব্যাগ থেকে একগুচ্ছ কাগজ বের করে আমার হাতে দিয়ে বললেন, ‘অপ্রকাশিত, মল্লিকা
সেনগুপ্তকে লিখেছিলাম। কখনো পারলে ছাপাস’। খুলে দেখি ২৭ পাতার A4 সাইজের একটা পাণ্ডুলিপি,
প্রথম পাতায় লেখা ‘মল্লিকাকে বলতে পারিনি যা’। এতক্ষণে খেয়াল করলাম মল্লিকা সেনগুপ্তকে
লেখা রঘুদা আর আমি মুখোমুখি, হাসি ছড়াতে ছড়াতে টোটো শহর ফাটিয়ে যাচ্ছে...
রঘুদা আমাকে মাঝে মাঝেই
ফেসবুকে মেসেঞ্জারে বিভিন্ন সময় কবিতা পাঠাতেন। সেইসব লেখা নিয়ে মস্করাও কম করিনি।
আজ অজস্র কথা মনে পড়ছে…
মেসেঞ্জার খুলে বসেছি, রঘুদার পাঠানো কবিতাগুলোর বেশিরভাগই উড়ে গেছে। যতটুকু আছে ডেট/মাস/সময় উল্লেখ করে প্রকাশ করা হলো (লেখায় কোনোরকম পরিবর্তন করা হয়নি)।
একগুচ্ছ কবিতা
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত
কাজরি গোলাপ ৩৫
কাজরি বিরহে শাশ্বত, ভায়োলিনে
সুফি, কবিতায় ময়ূরের পেখম
আমি তার মহিমাকীর্তন করিনি
কখনো, কোরিওগ্রাফিতে দিই নি রূপকথা
ভালোবাসাই একমাত্র মুক্তির
পথ ও লেখে ক্ল্যাসিক বিন্যাসে
জানি প্রেমে মাঝে মাঝে
পাখির কুজন ছাপিয়ে ফুটে ওঠে বৃষ্টির বাব্লস ,
বেগম বেগম বলে ডাকতে পারিনা
খোদার কসম তবু সে চোখের নু্র
তবু তার উটের সাওয়ারি আমি
হ্রেষারব কান্দাহার চলো
আমি তার সরাইখানার খিদমতে
পেশ মাংসের কাবাব এনেছি চিত্রকলায়
কী সুন্দর জীবনের মানে
অস্তিত্বের পিয়ানো আর কৌতুকের ঢেউ
কাজরি বিতানে মগ্ন অনায়াস
ছবি আঁকি নিজের বয়ান
বয়ান রেখেছি খুলে ঘোড়াদের
উপন্যাসে অবিশ্রাম নতুন জগৎ,
কাজরি আসার আগে শূন্য কি
ভয়ংকর ছিলো?
কাজরি আসার পর অফুরন্ত
আলো অনন্ত সময় সত্যি কি রাঙিয়ে তুলেছি?
ভেঙে পাঁচখান চাঁদের পাঁজর
ভেসে গেছে কুয়াশার রঙ
ঢাকা থেকে দেখা যায় বিষন্ন
রুমাল টেবিলে সাজানো
ঢাকা থেকে দেখা যায় খেজুরনির্যাস
গড়িয়ে পড়েছে পান্ডুলিপির পাতায় পাতায়
কাজরি লিখেছে-
‘আমি শ্লোক, তোমাকেই শ্রেষ্ঠ
বলে জানি, আর বাকি দুর্ভাগ্যবশত কানামাছি।
28 Apr 2012 at 11:46
am.
আলো করে রেখেছো ৩৪৮ ঘন্টা
অনেক সময় পর দরজায় ঘা দিলাম, আছো কি?
অন্ধকার ছিল না তো প্রেমপ্ত্রগুলো
এই নাও ক্লিপ,জাদুঘর এই
নাও চিরিনি সাবান
তোমাকে ভুলতেই পারিনা
ভেবে গর্বিত সন্ধ্যায় মদ
প্রেমে পড়লাম না তো ?
চিনামাটির ফুরফুরে গ্লাস
এই নাও আনন্দটুকু দীর্ঘতর
ফ্লোরেন্স
আমি শুচিশ্মিতার দোকানে
এসেছি
আমি সেই থেকে বসে আছি মদের
দোচালায়
পীড়া-উপশম চিনির পাত্র
আদারস আমার অস্তিত্ব
উপন্যাস লিখছি এখানে বসেই,
গন্তব্যের ধারণা জানিনা
বসে আছি ৩৪৮ ঘন্টা
আছো কি? আছো কি হাসির আওয়াজ,টাটকা
শশ্রূষা শুচি
6 June 2014 at 4.:5
pm.
পাপড়ি ৭
আমাকে নিয়েছো ফাঁকিবাজি
নেই
রঙতুলি মাখা জ্যোৎনা পাঠাবো
তোমার খোঁপায়,
চুলে চুলে আছি,
স্নানের ভাষায় ন্যাপকিনে
লেখা তোমার কবিতা
তোমার প্রকৃত জটিলতাগুলো
তোমার সনেট স্বামী ও পুরুষ
আমার দেরাজে তোমার উদোম
গোপন বৃত্ত,
রঙিন করেছি যন্ত্রণাগুলো
অজুহাত নেই
গুল্মলতায়
তোমার সবুজ হেঁয়ালি দিলাম,
প্রেমের দিবানা ছুটে আসে
মেঘ
জট খুলে যায়
ঝাঁপ দিই খুলে নিটোল রাত্রি
কী রূপ ইশারা হেয়ালি হর্ষ
নিদ্রিত রাখি
হুজ্জতে রাখি
স্খলন পতন কিচ্ছুটি নেই
অক্ষয় প্রেম নিঙড়ে নিলাম
আগুন উগ্র স্তনের শান্ত
চিহ্নে লিখব
শ্রেষ্ঠ কবিতা
2 Sept 2014 at 4:58
pm.
রূপকথার কাফে
১
রোমান্সের আগে চুলের স্টাইল নিখুঁত, যেন আজ এলোমেলো
রুটিনের শেষ, দুষ্প্রাপ্য প্লাটিনাম উঠে এলো জিওমেট্রিক, আমি তো মডেল নই মেকআপ নিয়ছি
শহরকে ভালোবেসে,বাটারফ্লাই আমি বাটারফ্লাই উড়ে উড়ে ইম্পিরিয়াল কাফে, স্ট্যাচু-কলকাতা,আমি
ক্যাথেড্রা্ল, মালবাহি ক্রেট,কবিকে নিয়েছি মিউজিশিয়ান,কাফের রকমফের সস। কবি,আমার দিবানা,
চিকেনের ফয়েল,ছেঁকে নিলাম বেকিংয়ের আগে। কে তাকে ম্যারিনেট করে! আমি জানি শাবানার অলিভ
অয়েল। কে তার বিবি আর কার হাতে আঙুর স্ট্রবেরি আমি জানি ভালো করে মিশিয়ে নিলাম দম্পতির
রঙ শাবানার ফ্রেমে, খানিকটা পারফিউম ছড়িয়ে পড়লো সোফিয়া লোরেনের মতো কারনেশন ক্রিসেন্থিমাম।
কবি,তোমার তিতলি আমি প্রজাপতি ফোকাল পয়েন্ট…
2 Sept 2014 at 9:53 pm.
জুবিন পর্বের কবিতা
৯০
সম্পূর্ণ মুছে যাবার আগে
জুবিন আমার শরীরে লবন ঢালো জল দাও
পৃথিবী জটিল, ওহে কবিতা
আমাকে একটু জায়গা দেবে ভূমিকা লেখার
স্মৃতির হার্ডডিস্ক তোমাকে
আদাব, প্রিয় ভোর-বেলাকার ভ্রমণ আমাকে এক কাপ চা দেবে
আমি আজ ভীষণ ক্লান্ত লক্ষকোটি
ছায়াপথ ফুটেছে শরীরে জুবিন-নিহারিকা দিব্যচেতনারবীজ আমার ধারক
আছো তুমি আমার ক্যানভাসে!
শব্দ স্পর্শ রূপ আর রসের গরিমা আমার শরীরে আমিআনাহুত গ্রন্থি ছিঁড়ে নতুন তরঙ্গ পথে
আছি
ধরো ধরো আমার কপালে নতুন
লেবেল এঁটে দাও
বলো সরাসরি বাতিল করেছো
আমাকে
৮৯
সংগ্রহশালার দিকে অদ্ভূত
নেশায় বুঁদ আমার জুবিন
অতল থেকেই আমি দেখতে পাচ্ছিলাম
আর সে সব আমি লিখে রাখবো অব্যক্তযন্ত্রনায়নিশিযাপনের কথা
আমি লিখে রাখবো পারিপার্শিক
রন্ধনশালায় যা যা হয়
মেদ-বৃদ্ধির একটু বা দিক
ঘেঁসে বুকের গহ্বরে যা যা হয়
আমি লিখে রাখবো এক মুঠো
জটিল কার্বন-ডাই-অক্সাইডের কথা
দেহের বাইরে দেহের ভিতরে
মধ্য বয়সে যৌবনে
আমি লিখে রাখবো হৃদস্পন্দনের
মাত্রা কেন বাড়ে আর কমে
সবুজ সংকেত দেয় ধমনীর মধ্যে
ঢুকে আহা
লেখচিত্রের নিখুঁত পর্যটন
এক আকাশ ভর্তি রূপোলি-হাইপারটেনশন
আর একটু ঘূর্ণি দাও ছিঁড়ে
খান খান হয়ে যাই
12 Sept 2014 at 12:27 pm.
চাঁদের সংগীত-৪
সূচক চাঁদের গান,কাছে টেনে জড়িয়ে ধরলাম।
তৈরি হলো ঘুমের পাহাড়।
ফেসবুক দ্যাখো,সেই শীতল ইশারা,
রোমে বসে চাঁদ যেন ম্যানডোলিন বাজাচ্ছে আর অনন্যা স্প্যানিশ গিটার
এক লহমায় ফুটে উঠলো অন্তরের টান
চাঁদ যেন রূপসী অলকা,গাইছে ‘আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ’
আসলে প্রেমের শক্তি, একটি সুন্দর উপত্যাকা।
কী করে মানুষ ঘুমায়? এতো কালঘুম কোথা থেকে আসে!
আমার প্রথম পার্কস্ট্রিট আলো ঝলমল; আমি সারারাত ডুবে রইলাম
তীক্ষ্ণ দৃষ্টির জলে।
পুরোনো জীবন থেকে এই আমার প্রথম বিচ্যুতি,
আলাদা সম্মানের কবি হওয়া মাঝামাঝি রাত
দূরে বিচিত্রিতার কলকাতা চাঁদ নয় ত্রিফলা আলোর রেখায় নতুন রোমাঞ্চ
চোখে ধাঁধা লাগে ও যখন স্বপ্নের ফর্মুলা লেখে আকাশের গায়
লয়লা মজনু মায়াবী মর্মর
না চাইতেই তুলে ধরলাম ড্রিমবুক, নতুন ফ্লেভার, এই আমার কবিতা
প্রেমিক মানুষ বেড়াতে বেড়িয়েছি যদি চোখাচোখি হয়, ঈশ্বর করুন তা যেন
আর না হয়,ভ্রমণে খুশিভরা মুখ,পত্রফোন আসে আর যায় মেঘের ওপারে
আমি ফুলের বাহার চাইলাম অনন্যার কাছে,
সন্ধ্যাতারা-স্ট্রিটের কল্পনা অজ্ঞাতসারে বিচ্ছুরিত হলো,
কবিতা লেখার আগে আমি ছিলাম শৃঙ্খলাপরায়ণ
এখন ‘আশার ক্ষমতা’ নিয়ে ভাবছি, পরিশুদ্ধ করেছি মন,তা যেন প্রাকৃতিক থাকে
জীবনের একটি সত্য-ইচ্ছার কথা জানতে চাইলাম অনন্যার কাছে
ও বললো কল্পনায় কনট্রাকটার আমি,সিটিসেন্টার,উড়ে যেতে পারি হ্যান্ডগ্লাইডারে
পারস্য ইরাণ সুইডেন
আমি বললাম, কল্পনার শক্তি চাই দশ-হাজার কুইন্টাল,দাও তুমি
অনুগ্রহ পেলাম তার কাছে আর ফিরিয়ে দিলাম এক পাত্র দুশ্চিন্তার ছায়া
13 Sept 2014 at 8:30 am.
উরঙ্গম
পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত
১
এই একটি নতুন চিরাগ, দেখতে পাচ্ছো!দূরে পেল্লাই পাহাড়
মেঘগুলো
তাদের হাঁটু পর্যন্ত কালপুরুষ
বুকের মধ্যিখানে সপ্তর্ষিমন্ডল
কটিবন্ধে পঞ্চাশটি সাদা তারা
আর আমার মেহগনি কাঠের বেডরুম,মর্তলোকের তলপেটে যেমনটি হয়
আলো নয়
অন্ধকারের লোভ দেখাচ্ছে বাঁদী
ওর হাতেই প্রথম দেখেছি চিরাগ
২
ঐ যে
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মন খারাপ
টের পেলাম
আমার কপাল পুড়তে শুরু করেছে
কোপদৃষ্টি খুলে খাচ্ছে পাথেয়
পয়গম্বর,যাত্রাপথের সহচর আপনি
তুরপুন বিঁধে দিন আমার কপালে
তুচ্ছ হয়ে যাক আমার কবিতা
৩
আমার জীবন পায়ের পাতায় আটকে রইল
নিশানা ঠিক ছিল কিন্তু
মুখের অন্ন নষ্ট করলে একটি সরাইখানা
বললে, আপনি তাজ্জব;আসুন ভিতরে গিয়ে বসি
অন্দরে তখন দশটি ঘোড়ার স্বপ্ন
টকটকে লাল ঝালর পেতেছে মন
সে এক নতুন দোকানী
গালিচা পেতে দিলেন আমার বুকে
বিশাল বিত্তশালী হবার পরিমাপ জানি না
একটি বৃক্ষ একটি অট্টালিকা আর একটি হাতির দাঁতের চোঙা
ঢুকে পড়লো মৌতাতে
৪
রসুইখানায় নতুন চিরাগ, আলো জ্বলছে
জীবন সুখের হোক তাই বিবি শস্যশ্যামল,
পাখির পালক,নানা ফুলের রঙ
বেহেস্তের খুব কাছে ভূটান পাহাড়
টুক করে খসে পড়ল কমলার রঙ
চোখে ঘুম নেই,
বিবি তুলে দিলেন বারমাচী কাবাব
শুকনো রুটির পাশে কি বেমানান বলো!
৫
প্রতিদিন যা আমার রোজগার
তাতে তার চিকিৎসা হয় না
ফড়িং আমি ধর্মের ভয়ে মরি
ওফ,পুড়ে গেলাম,উচ্ছন্নে গেলাম
বিবিকে রোশনাই দেবো কীভাবে বলুন
ঘরে ঢুকে জেল্লা তো ছাই অন্ন সংস্থান বিশবাঁও জলে
আমি জিন্দা আছি,বিবি তোমার বুকের কলিজা নিয়ে খেলা করি
আমরা দুজনে চলো মাছি হয়ে যাই
৬
দোকানী তুড়ি বাজাতেই বিবির নিখুঁত বর্ণনা দেখতে পেলাম
কিডনি কি সত্যি নষ্ট হয়ে গেছে,বুঝিতে পারি না
কি মিষ্টি করে হাসলো পূর্ণিমা
আর তোমায় বকুনি দেবো না,হাসির ঝিলিক দেবো,কটাক্ষ না
আমার দাঁড়াবার সময় নাই,
জীবন সীমিত বলে দাপাদাপি আর তুমি করবে না বলো?
আল্লা তো আছেন উপরে।
৭
খোদা,প্রান্ত অবধি অস্থির আমি,ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে চাইনা
আমার গরীব দশা এ মহা অপরাধ
আমার গৌরব নাই,বিবি নাই,দেনেওলা নিরুত্তাপ,মনিবের ঘোড়ায় আগুন
সান্তনা দিলেন আল্লা
তোর বিবি ভাগ্যে জুটেছিলো
নিরেট বেকুফ আমি, আত্মা অতৃপ্ত হলো, অদৃষ্টের লিখন অপূর্ব...
15 Sept 2014 at 6:34 pm.
মেলায় খেলায়
১
অন্ধকুপ,মদের পিঁপে যেমন
মেহগনি কাঠের পাটাতন আড়াআড়ি দাঁড়ানো রয়েছে
মাটির ঠিক ১২ ফুট নীচে
এ খেলা মৃত্যুর নিজস্ব সেরেমনি
আল্লা আমাকে রোমান্টিক
করো দিবানা যেমন
ষাড়ের মুখের সামনে রেড-ক্লথ
উত্তেজনায়
১০০০ ফুট সুইসাইড পার্ক
থেকে চাঁদ উঁকি মারছে বেইরুটে
আমাদের থ্রি-পাইন কলোনির
কানা-গলি শিমলার রক-লিফ্ট দার্জিলিং রোপওয়ে
আর যা যা শিমূল তুলোর মতো
ভেসে যাওয়া তারায় তারায়
এ খেলা মেলার দক্ষিণ দিকে
পুলিশের চোখের সামনে
এ খেলা দমবন্ধ নিশপিশ করে
হার্টবিট ওঠা-নামা করে চল্লিশ থেকে আশির বাগানে
যা আমি দেখেছি শৈশবে এখনো
তো দেখি তাই তিরের তীক্ষ্ণ-সাম্পান
ভয়ের প্রচ্ছন্ন বুম-বুম
কামানের রঞ্জিত স্পুটনিক
17 Nov 2014 at 11:17 am.
আমি ও মানালী সিরিজ
১
গল্পের ছলে এই আমাদের নতুন
কবিতা, দুষ্টু মেঘের গায়ে লেখা ফুটে উঠবে দেখো
ফেসবুক ভেসে আছে যেন সে
মানালীকে চেনে এই নাও হংকং মার্কেট সাবানের ফেনা
গোসলের আগে বাথটাবে জেসমিন
ডালিয়ার ঘন নির্যাস আলো পাবে ত্বকের রোমান্স
আমি কি দুনিয়াদারির বুঝি
কিছু মানালীর নিরুচ্চার কথা আমি কি লিখবো প্রলাপ
হাঁসের বকের গান কাকভোর
জ্যোৎস্নার ডিম পিঁপড়ের কিউ লিলিপুট মিনিয়েচারে
গল্পের ছলে এই আমাদের নতুন
কবিতা,ফেস্টুনে হ্যান্ডবিলে আখের পানায় কিয়া বাৎ
আমি জানি মানালী ঝিলের
পরি বিমান সেবিকার সাদা গন্ধের উধাও রজনী
আমি জানি ও কোনদিন আসেনি
জলপাইগুড়ি দোলনা ব্রিজের নিচে দেখেনি কচুরি
পানায় ফুল ফোটে,দেখেনি
শ্লোকের বাড়ি ধূপগুড়ি হাট বসে শুওর-কাছিম
মানালী আসবে বলে বাতাবি
লেবুর ঘ্রাণ স্প্রে হলো ঝুপড়িতে রাস্তায় মলে মলে
আমি ওকে ইস্তানবুল নিয়ে
যাবো দেখবো ঘোড়ার ডানা উড়ে যায় চাঁদের বাজারে
7 Oct 2014 at 11:03 am.
মেলায় খেলায়
১
অন্ধকুপ,মদের পিঁপে যেমন
মেহগনি কাঠের পাটাতন আড়াআড়ি দাঁড়ানো রয়েছে
মাটির ঠিক ১২ ফুট নীচে
এ খেলা মৃত্যুর নিজস্ব সেরেমনি
আল্লা আমাকে রোমান্টিক
করো দিবানা যেমন
ষাড়ের মুখের সামনে রেড-ক্লথ
উত্তেজনায়
১০০০ ফুট সুইসাইড পার্ক
থেকে চাঁদ উঁকি মারছে বেইরুটে
আমাদের থ্রি-পাইন কলোনির
কানা-গলি শিমলার রক-লিফ্ট দার্জিলিং রোপওয়ে
আর যা যা শিমূল তুলোর মতো
ভেসে যাওয়া তারায় তারায়
এ খেলা মেলার দক্ষিণ দিকে
পুলিশের চোখের সামনে
এ খেলা দমবন্ধ নিশপিশ করে
হার্টবিট ওঠা-নামা করে চল্লিশ থেকে আশির বাগানে
যা আমি দেখেছি শৈশবে এখনো
তো দেখি তাই তিরের তীক্ষ্ণ-সাম্পান
ভয়ের প্রচ্ছন্ন বুম-বুম
কামানের রঞ্জিত স্পুটনিক
17 Nov 2014 at 11:17 am.
জলের সঙ্গে খেলা
জলের সঙ্গে খেলা
এ কেমন তোমার প্রাইভেট
প্লেস
এ বুঝি তোমার বাথটাবে নতুন
জানালা
ইমোশনাল অত্যাচার
সিকোয়েন্স তাড়িয়ে তাড়িয়ে
অভিনেত্রীর গান
ডাকসাইটে ছোটো ছোটো দুটি
দুষ্টু বিনুনি
আলো যেন বেশ অ্যাপেলিং
হয়
ওয়াশ বেসিন
টয়লেট
বাথরুমে জলের সঙ্গে খেলা
সরু গোঁফ
নতুন ইমেজ
কি মদ খেয়েছেন আপনি
রঙ্গরসিয়া
18 Nov 2014 at 11:21
am.
প্রথম আগুন
১
গাছে গাছে তখন কুয়াশা
জানালা দিয়ে বাইরে
আমাদের বাকবিতন্ডায়
তুমি বললে ইসস
নিরসনের উপায় সাতকাহন জানালা
খুলতেই
বেকসুর খালাস পেয়েছে কুয়াশা
তুমি যদি প্রিয়ংকা প্রিয়া
বলে ডাকতে পারি বলো
নিরসনের উপায় বিভ্রান্তির
রূপ
বুঝে পাই না তোমার কী হয়েছে
তোমার ঘাড়ের উপর কে যেন
জলপ্রপাতের মতো
লকলক করে
লাফিয়ে ওঠা আগুন বুঝিবা
বিভাজনগুলো ছিঁড়ে দিল মেঘ
প্রিয়া পুড়ে গেল প্রাজ্ঞ
নিঝুম
ফেসবুক থেকে ঝুঁকে পড়া
নাম জমাট বাঁধেনি
কয়েক মিনিট বাদানুবাদের
ক্লান্তপ্রপাত
অনেক বেশি তা বন্ধু আমার
খিদমতে আছি
দীর্ঘ পথের এই টাঙাটিকে
ভিড়ের মধ্যে লুকিয়ে রাখি
20 Nov 2014 at
12:07 pm.
পরস্পরের উত্তাপ
২
সেই বিষণ্ন রাত্রিটিকে
আমার পাপড়ি খুঁটিনাটি লিখে রাখলো মনে
আমার দুর্বল স্নায়ু পদক্ষেপে
পদক্ষেপে অজুহাত আমি ভাবি কেন আমি পালটাচ্ছি না
রাত্রি আমার বন্ধু অবিন্যস্ত
চুলে চুমু খেয়ে টোকা দিই চাঁদের আলোয়
জটিল বুনন তার জানালায়
জানালায় আইকন আত্মগরিমা
সে চোখ ফেরাতে পারি না
বেগম বেগম সব ঠিক থাকলেই আল্লার কসম
ফিরদৌসী তুমি প্রচুর প্রাণিত
জীবন ঈপ্সিত আশ্রয়
উত্তাপটা গ্রহণ করেছি রাত্রি,ঘনিষ্ঠতা
কৃষ্ণের বাঁশি
সঙ্গীকে আসক্ত রাখি লুকিয়ে
পাপিয়া ডাকি আরও কতো নামের বাহার
টকিজে প্রকৃতির কোলে ঘোরে
আছি উপযুক্ত শান্তির আশায়
গাছে গাছে তখন কুয়াশা
21 Nov 2014 at 10:08 pm.
পরস্পরের উত্তাপ
৪
সেই বিষণ্ন রাত্রিটিকে আমার পাপড়ি খুঁটিনাটি লিখে রাখলো মনে
আমার ইলাস্ট্রেশন কথা বলে
উঠলো বেঠোফেন বেঠোফেন
একাকীত্বের মুহূর্তেও আমি
বিচ্ছিন্ন নই আমি বন্ধুত্ব বজায় রেখেছি
স্পষ্ট হলো চিত্রকর ইষ্টিকুটুম
তোমার বাতাস
অদ্ভুত স্বপ্ন দেখ তুমি
ঝুঁটিঅলা পুরুষ পাখির ডিম ফুটে শাবকের আঙুল
ক্রমশ বিভূতিভূষণ পথের
পাঁচালী উদ্ধারণপুরের ঘাট
অন্তরের তহবিল থেকে একটু
হালকা মিশিয়ে নিলাম চকমকি
মদ্যহীন আমার জীবন কুহুরব
সংগোপনে মেশে তুমিও ক্লাসিক
গোপন রেখেছি প্রেম তোমার
নিরাপত্তা পালক
জটিল বুনন তার জানালায়
জানালায় আইকন আত্মগরিমা
আমি প্রশংসা পাচ্ছিলাম
উন্মুক্ত দরজায় যামিনী রায় উদয়শংকর
মেমসাহেবের গা ঘেঁষে একটি
সম্পূর্ণ বিকেল ডুবে যাচ্ছে
মেঘে মেঘে একটা শূন্যতা
টলোমলো আমি উঠে বসি
উত্তাপটা গ্রহণ করেছি রাত্রি,
চিত্রিত করেছি ডেজার্ট ছুটন্ত ঘোড়া
আমার রঙ্গালয়ে নতুন শৃঙ্গার
সরসী-হিল্লোল
এই এক সত্যি দুষ্টুমি শরীরে
বলিষ্ঠ কুহেলিকা রাতের আসর
নানা ভাবে নিজেকে নির্মাণ
করি মাথার পাগড়ি খুলে
বিদগ্ধ সুডৌল সেই রস অঙ্গের
শৃঙ্গার অতি বিরল তুমি অবলীলা
যৌবন যুগল প্র্য়াস এই নাও
সান্ধ্য-বেনারস ধ্যানজ্ঞন তৃতীয় প্রহর
30 Nov 2014 at
2:11 pm.
ডুয়ার্স ফটোগ্রাফার
১
যদি সে রাত নিয়ে কথা বলে
পুড়ে ছাই পিপিং জঙ্গল
অ্যাডোপ্টার নেই
কি হবে জ্যোৎস্নার সময়
বাজপাখি
চিলের চিৎকার
রংটং পাখিঝিল
হিলভিউ থেকে
যুবতী মেঘেরা ফিরে এলো
ঘরে
যদি সে ঝিলের ওপারে গিয়ে
চুমু খায় আকন্দ পাতায়,
হায় আল্লা
ভেবে দেখো ঐরাবত খেয়ে নিচ্ছে
৪কুইন্টাল আকন্দ সরবত
এমনিতে মদের নেশায় কাবু
বাংলোবাড়ি
হুইস্কির পিঁপে
তায় সে
আকন্দ মেরেছে ১০ পেগ,
ঘোড়াগুলো রাম খায় বলে কত
কথা
যা তোরা জংগলের মধুচাক
তছনছ করে ময়ূরের উঠোনে
বলড্যান্স
আমি নাড়াঘাটা কবি
মুলুকে পাইনি ভালোবাসা
পাইনি আখের পানা
ক্যামেরার গান গাই
ময়ূরিকা
গাগরি যূথিকায়
ছবি তুলি
শুখা দিন
মদের গামলা কোথায় রেখেছি
কে জানে।
4 Dec 2014 at 4:24 pm.
অলীক-মাধুরী
আমি আজ স্ফীত, অদম্য, লাল
চকচকে চেরির মতন।
আমি যেমন কল্পনা করেছিলাম,
আমার প্রেমিকার মুখ তার
চেয়ে বেশি মিস্টি আর সুন্দর।
ছবি তো মনে থাকে,সেই মনে
থাকার সংগে কিছু কল্পনার শৈলী মিশিয়ে নিই।
যদি প্রেমিকার মুখ আমার
হৃদয়ে জ্বলজ্বল না করলো তবে সে কেমন প্রেম।
কতো যত্নে তোমার উষ্ণ ঠোঁটে
চুমো খাবো তুমি জানো না,
আহা সে তো মাখনের মতো নরম,
সে আমার আভ্যন্তরীণ স্বর,
বলে উঠবে শ্লোক কাছে এসো,
কিছুক্ষণের জন্য আমি ভুলে
গেলাম তোমায় স্পর্শ করতে,
কিছু পরে যা কিছু হৃদয়ে
আছে তা প্রকাশ করতে চাইলাম উদ্দাম ভাবে।
তুমি কৌতূহলে পাগল আর ভিতরে
ভিতরে প্রেমোন্মুখ,
কী অবাক লাগলো যখন তুমি
লিখলে 'ভালোবাসি'।
সুন্দরী তুমি কি থরথর করে
কাঁপছিলে তখন?
আমি কাঁপছিলাম অন্তত ৩৫মিনিটের
হিম-ঠান্ডা-উত্তেজনা,
তুমি কি কৌতূহলে পাগল আর
ভিতরে ভিতরে প্রেমোন্মুখ ছিলে
5 Dec 2014 at 5:32 pm.
মা
ঘুমিয়ে আছেন মা, অস্তিত্বের
স্কুলে গল্পের লাউড রিডং
মিলন রান্নার স্টোভে,কিন্তু
কি গল্প শুনবেন মা,আকাশ ঘূর্ণির?
মুচকি হাসল মা ঘুম ঘুম
কেয়রটেকার ফুটফুটে চাঁদ
আগুনের শিখায় জুবিনের জীবন
দর্শন ইস্তেহার লেখা হলো বেসামাল
চৈতন্যে অচৈতন্যে পথ অবিচল
দে মাস্ট লার্ন টু ডাই লালন কাফকা
পাখির মতো র্যাবো উড়ে
চললেন
আত্মার জাগরণ চাই মিলনের
চমকপ্রদকে মুরুব্বি ভেবো না
বাংলা কবিতা উঠে বসেছে
শ্বাস নিতে হবে অসত্যের হাত গড়াগড়ি
কি রকম মুক্তি ভ্যানগখ
কি সেই জাগরণ কবরের মাটি
উড়োচিঠি ঘোড়া
আমার মা ঠুক ঠুক করে পা
ফেলেন কালিদাসে
আমি একটি গোলমেলে কনসেপ্ট
টোটোকম্পেনী ছাড়া কিছুই শিখলাম না
নবারুণদা আর একবার আমাদের
উপত্যকায় আসবে?
31 Dec 2014 at 11:50
am.
আলোর কাক
ধীরে ধীরে সেই অক্টাভিয়া
সম্পর্কের উপর ঝুপ করে বসে পড়লো
চড়ুইপাখির ডানায় ডানায়
খুব নিচু স্বরে কথা
‘যা তোরা ঠান্ডা অন্ধকারে
যা,বোকা কোথাকার,
তুমি কোথায় তুমি কোথায়
ধুলো উড়িয়ে,উত্তেজিত কাক’।
অক্টাভিয়ার সাথে আমার নতুন
পরিচয়,সৌজন্যমূলক,
আসলে অরুন্ধতী, সুদৃঢ নীরবতা,ফুলের
বাগান নতুন রসায়ন।
পাখি,ডায়মন্ডহারবার,রোম
থেকে বুলবুলি শালিখ পায়রা
কী সুন্দর গুছানো বৃক্ষের
সারি,বাঁশঝাড়,উপত্যকার ঝিল
সেসব খালবিলে টিলার মাথায়
টংঘরে আমি রোজ
হিসেব মেলাই,কি হলো কেমন
করে হলো
যা তোরা ঠান্ডা অন্ধকারে
যা,বোকা কোথাকার
শিশির ভিজিয়ে নিলাম শিশিরে
মা মাখনের প্রতি হাত বাড়ালেন
আর কিছুতেই তার মন নেই
কাঁচা লঙ্কায় ভিজিয়ে নিলেন
ভাতের প্রদাহ
আমার ইচ্ছে করে না মাকে
ছেড়ে দূরে কোথাও যাই
তবু যাই তবু যেতে হয় মাকে
ভালো রাখবো বলেই তো
মা তা কিছুতেই বোঝে না
যাস না যাস না তুই আমি
একা
কাকেরা পাহাড়া দেয় মাকে
মা ওদের ভাত বেড়ে দেয় চৌকাঠে
ঝাকে ঝাকে পাখিরাও আসে
মা ওদের দানা দিয়ে বলে
যাবি না কোথাও
4 Jan 2015 at 10:32
pm.
ছড়া তোমার জন্য
খচ্ছো চা পিকো অরেঞ্জ সঙ্গে
ভুখা রাজনীতি
হঠাৎ কেন বৃষ্টি এলো পাহাড়
থেকে শীত ভীতি
উলের টুপি নরম ব্লেজার
রাজস্থানী কম্বলে
মানছে না শীত বড্ড কাঁপন
সহিনী দিদি মখমলে।
19 Jan 2015 at 10:14
pm.
ঝিলের মণিমাণিক্য
অক্ষরে অক্ষরে শরীরে মিশেছি
গন্ধ নেমেছে আড়ালে
টেলিফোন গ্রীবা
নৈকট্যের অভ্যন্তরে ঘুম,পরিভাষা
নেই,রাত্রি নিঝুম
রূপবতী খুঁটে খুঁটে দেখছিল
আমাকে
সত্যি পুরুষ কুরুক্ষেত্রের
প্রতিটি চুমুক ঐন্দ্রজালিক,সোল্লাসে
ঝাঁপিয়ে পড়েছি
অতলে বজ্রের সমান শরীর
খেলিয়ে
অলৌকিক হতে পারে এই প্রেম
নেশায় মেতেছি
24 Feb 2015 at 4:29
pm.
0 মন্তব্যসমূহ