একগুচ্ছ কবিতা
পিয়াস মজিদ:
জন্ম-২১ ডিসেম্বর, ১৯৮৪, সূর্যসেন আর প্রীতিলতার বিদ্রোহী শহর চট্টগ্রামে। বেড়ে ওঠা শচীন দেববর্মণের শহর কুমিল্লায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর ইতিহাস বিষয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পিয়াস বর্তমানে বাংলা একাডেমি, ঢাকা-এর জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন।মূলত কবিতা লিখেন। পাশাপাশি গল্প ও প্রাবন্ধিক গদ্য, সম্পাদনাকর্মেও সমান স্বচ্ছন্দ। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশের অধিক। বাংলাদেশ ও ভারতের সংবাদ-সাময়িকপত্র ও লিটলম্যাগের নিয়মিত লেখক পিয়াস ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার’, ‘হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার’, ‘দাঁড়াবার জায়গা পুরস্কার, কলকাতা’, ‘আদম লিটলম্যাগ তরুণ কবি সম্মাননা,কলকাতা’, ‘ইতিকথা সম্মাননা,কলকাতা’-সহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত। ২০১৬ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশ যুব প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে ভারতের চারটি রাজ্য সফর করেন।
কবিতা
আছে
পিয়ানোর সুরবিধি
সময়ের অসুর গতি
ভেবে-বুঝে দাঁড়াই
তোমার দিকে।
তুমি;
বিস্ময়ের বোবা সৌধ
বিনষ্টির ভিত্তিপ্রস্তর
ইমারত-
তোমার উদ্বোধন কতদূর!
ফসলে ছাওয়া মাঠ
হাওয়ায় হাওয়ায় কৃষিকান্না।
জলগানের গতরে
আগুনের আলখেল্লা
আমার রাতের রেওয়াজ থেকে
একটি কুসুম তার
সুবাসী কোষ
কই হতে কই
লইয়া যায়...
সোনার শেকলের শেকড়
কাটবে কে!
সকলেরই আছে রোগ
অর্শ কিংবা ভগন্দর।
এই অসহ-আলোর অঞ্চল
দূর হ তুই
দেখতে না পাই
তমস-প্রেমের প্রেত।
খরা-মরসুমে
এত এত নাচের স্রোত!
সমুদ্র তো আছে
পোষ না মানা দাহগুচ্ছ।
ভূতের বসত যেথা
সহজ কিস্তিতে
আমাদের ভবিষ্যৎ গাঁথা,
অ্যালেন পোর অসহায় মার্জারের মাথা
রক্তের পিচকারি,
দূর হয়ে যা যত
অভাবের প্লাবন।
কবিতা-মুলতবি হাতে
নথির কুসুম ফোটে
কে কবে তোমাকে বলে
বিভূতির কারবারি
শুধু এক ভারবি!
শুদ্ধতার প্রসাধন জানি
ইতিউতি ঘাসের প্রমাদ।
যেমন নারীরা ঘুমোলেই
জাগে
নারীর ভেতরের পরি;
অনিদ্রকালে তার ডানার কুঞ্চন
যথাসাধ্য পুরুষের প্রসার।
মনের মেঘ
প্রাণের পইখ
বজ্ররুদ্ধ দিগন্ত বখিল
আয় নেমে আয়
জলের আয়াত।
আমাদের জাদুর ইশকুল
এবিসিডি অন্ধকার
আলোর বস্তা;
দ্যাখো
সেতার-সহজ কী করে
বাধ সাধে
দিগ্বিদিক আমার আভায়।
মেনে নেয়া অসুরের আলপনা
তারপর,
প্রাগতিক পথিকের
সামূহিক বিকাশ
যৌথ শয়তানি
পবিত্র লিবিডো-খামার।
‘এখানে খাঁটি গরুর দুধ পাওয়া যায়’ নাকি
‘বিশুদ্ধ বিষ পাওয়া ভার’?
ভাষার সুর নিলে
নিতে হবে
ভাষার বজ্জাতিও।
কথা কও কথা কও
অগ্নিআগামী
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে
ছারখার করে দাও এখনি।
শবগোলাপের রহস্যগন্ধ তুমি
কোনো গোয়েন্দাগল্পের জন্য
তুলে রাখো।
মৃত্যুর মিস্তিরি কাল আসুক বরং
আজ আপাতত তন্দুরি খাই
গরম-গরম।
কায়াকুসুমের হ্রদে
ডুব দিয়ে
খাবি খেয়ে
স্টাডি-
কবরশালার জীবনযাত্রা।
শূন্যের শাহেনশাহ
দু’দিনের ফকিরি
খুদকুড়ো-আভায়
মলিন করা কেন,
লাশ-ভাষার
মরমি মঞ্জিল!
সময়ের অসুর গতি
ভেবে-বুঝে দাঁড়াই
তোমার দিকে।
তুমি;
বিস্ময়ের বোবা সৌধ
বিনষ্টির ভিত্তিপ্রস্তর
ইমারত-
তোমার উদ্বোধন কতদূর!
ফসলে ছাওয়া মাঠ
হাওয়ায় হাওয়ায় কৃষিকান্না।
জলগানের গতরে
আগুনের আলখেল্লা
আমার রাতের রেওয়াজ থেকে
একটি কুসুম তার
সুবাসী কোষ
কই হতে কই
লইয়া যায়...
সোনার শেকলের শেকড়
কাটবে কে!
সকলেরই আছে রোগ
অর্শ কিংবা ভগন্দর।
এই অসহ-আলোর অঞ্চল
দূর হ তুই
দেখতে না পাই
তমস-প্রেমের প্রেত।
খরা-মরসুমে
এত এত নাচের স্রোত!
সমুদ্র তো আছে
পোষ না মানা দাহগুচ্ছ।
কায়াকবরের কারু
সহজ কিস্তিতে
আমাদের ভবিষ্যৎ গাঁথা,
অ্যালেন পোর অসহায় মার্জারের মাথা
রক্তের পিচকারি,
দূর হয়ে যা যত
অভাবের প্লাবন।
কবিতা-মুলতবি হাতে
নথির কুসুম ফোটে
কে কবে তোমাকে বলে
বিভূতির কারবারি
শুধু এক ভারবি!
শুদ্ধতার প্রসাধন জানি
ইতিউতি ঘাসের প্রমাদ।
যেমন নারীরা ঘুমোলেই
জাগে
নারীর ভেতরের পরি;
অনিদ্রকালে তার ডানার কুঞ্চন
যথাসাধ্য পুরুষের প্রসার।
মনের মেঘ
প্রাণের পইখ
বজ্ররুদ্ধ দিগন্ত বখিল
আয় নেমে আয়
জলের আয়াত।
আমাদের জাদুর ইশকুল
এবিসিডি অন্ধকার
আলোর বস্তা;
দ্যাখো
সেতার-সহজ কী করে
বাধ সাধে
দিগ্বিদিক আমার আভায়।
মেনে নেয়া অসুরের আলপনা
তারপর,
প্রাগতিক পথিকের
সামূহিক বিকাশ
যৌথ শয়তানি
পবিত্র লিবিডো-খামার।
‘এখানে খাঁটি গরুর দুধ পাওয়া যায়’ নাকি
‘বিশুদ্ধ বিষ পাওয়া ভার’?
ভাষার সুর নিলে
নিতে হবে
ভাষার বজ্জাতিও।
কথা কও কথা কও
অগ্নিআগামী
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে
ছারখার করে দাও এখনি।
শবগোলাপের রহস্যগন্ধ তুমি
কোনো গোয়েন্দাগল্পের জন্য
তুলে রাখো।
মৃত্যুর মিস্তিরি কাল আসুক বরং
আজ আপাতত তন্দুরি খাই
গরম-গরম।
প্রজ্ঞাপাপ
কায়াকুসুমের হ্রদে
ডুব দিয়ে
খাবি খেয়ে
স্টাডি-
কবরশালার জীবনযাত্রা।
শূন্যের শাহেনশাহ
দু’দিনের ফকিরি
খুদকুড়ো-আভায়
মলিন করা কেন,
লাশ-ভাষার
মরমি মঞ্জিল!
জীবনের জাদুঘরে
আনারস খাওয়ার পরপর
দুধ পানে
আগের মতো
এখন আর কেউ
অতটা তটস্থ হয়না।
মৃত্যু আজকাল
জীবনের জাস্ট
বিপরীতার্থক কিছু না।
আমি আজ
একপ্লেট আনারস খেয়ে
গ্লাসভরা দুধে চুমুক মেরে
বসি তোমার
দাউদাউ উপকূলে।
এবার তোমার
আচারের বয়াম থেকে
চেখে দেখতে হয়
জীবনের যাবতীয়
মরণঘন স্বাদ;
টক-মিষ্টি-ঝাল।
ভাষা
তোমার কাছে আসার পথের শত্রু,
আমার নড়বড়ে ভাষার সেতু।
প্রেম তো কিছু
অলীক অক্ষর।
অবশেষ
খুন হয়ে যাওয়ার কালেও
নীল নূপুরে ছেয়ে আছে পা;
সব কর্দমের ভেতরেও
পৃথিবী এমনই নন্দনের মেয়ে।
শীতে কুঁকড়ে গিয়েও কথা কয় কুয়াশার ভাষায়।
লোভের লাভা জ্বলমান;
তার আঁচ গায়ে লাগে-
অঙ্গার আর ছাইয়ের ডাঁইয়ে পড়ে থাকে
মেয়েটার কম্পিত ক্রন্দন।
জীবন থেকে নিয়ে
মরণের দিকে যাওয়া-
এই-ই তো ছিল
সোজাসাপ্টা রাস্তা৷
তবু ভুল করে যে মধুপথ
বেছে নিল সে;
লোকে সেই সন্দেহজনক সন্দর্ভকে 'কবিতা' বলে ডাকে।
অতঃপর
স্বপ্নস্রোতস্বিনী,
তোমার তমসে জ্যোৎস্নামাছ।
তার আঁধার-আমিষ
খাদ্যধর্মের মোকাম থেকে
তুলে নিয়ে
মরণের জীববিজ্ঞান শেখা-শেষে
কবির শহিদ শ্বাস
বিলি হতে থাকে
ওয়ান টাইম প্লেটে।
পৃথিবী-গুদামঘরে মজুতদারি
হাসিকথা, কান্নাকাহিনী
রাহু আর দেবী।
এখনও দাঁড়িয়ে আছি
ভাঙনের স্বরলিপি,
ভোরের ভাঙচুরে
বিকেলের মুখস্থ
যাবতীয় ব্যঞ্জনবর্ণ।।
কুসুমের ক্লাসে
নিরক্ষর রাত
সুরভিতে স্নাতক।
জাগো জাগো
মহামারির মানুষেরা,
ঝড়ের গন্ধে
একবার নিভে গিয়ে
জ্বেলে দাও
রোদনের রূপসী মঞ্জিল।
যেন আর স্থগিত না হয়
ব্যথার দীপালি
বেদনার রৌশন-চৌকি।
অন্ধকারেরও একটা
ঊষাকাল থাকে,
মৃত্যুরও যেমন জীবনপ্রণালি
তারার তছনছ থেকে
ঠাহর হয়,
মেঘভারাতুর ময়ূর।
যদিও কেকার গুচ্ছ
ধূসর বসন্ত;
আমাদের উন্মাদ-সীমান্ত
সমঝোতার কাঁটাতার
প্রশ্নটা পারাপার
উত্তর জরিপাড়
বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি
পঁয়ত্রিশ বছর
জাদুটোনা বা যুক্তির জীবন।
তুলাগদ্যের বালিশে ঘুমায়
গানের বেড়াল
মুহূর্মূহ মিউ মিউ থেকে
ছেঁকে তোলা নৃত্যের জল
ডুবে বেঁচে গেছি
নাকি মরে গেছি!
উঠোন এখন অমলাশঙ্কর
কে সেই সুন্দরী!
নাচ না নাচের পরি?
তোমাকে দেখি
কিন্তু ভালোবাসি
তোমার সংলাপের সমাধি।
বিস্মৃত-বিষ সাপের সিম্ফনি
তারপর তক্ষকতরুর
ছায়ার হাওয়ায়
মধুমালতীপুর।
সরোবর থেকে সংকেত-সাগর,
বিনাশের আয়ু
এক দুই তিন
বছর গোনে।
জ্যামিতিখাতায়
অপজন্মের ঢেউ ;
আরও একটি কবিতার।
1 মন্তব্যসমূহ