স্বরজিৎ মিশ্র
দেখা আর না দেখার ভেতর অদ্ভূত একটা সাঁকো দাঁড়িয়ে থাকে। দাঁড়িয়ে থাকে কেবলই দোদুল্যমান।
সকাল হওয়ার আগের একটা সাঁকো, সকাল বেড়ে চলা এবং মানুষের ভিড়ের মধ্যে সাঁকো এবং আলো
বন্ধ হয়ে গেলে রাত্রির চুপচাপে একটা সাঁকো। মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে, দেখে অজস্র ধকধকে, কেঁপে
ওঠে নিজরই ভেতর- যেভাবে কেঁপে ওঠে আমার আত্মা, আমার মলাট- ‘মলাটের অর্ধেক’।
নীরবতা মানেই অন্ধকার গলি, যেখানে একমনে কত কথা বলে মানুষ। যেখানে সব কাজ ফেলে
নিজের কাছে বসতে ইচ্ছে হয় অসমাপ্ত কথাগুলোর জবাব খুঁজতে। রাত্রি ১২’টার নীরবতা, রাত্রি
১’টার, রাত্রি ১.৩০’টার নীরবতা যেভাবে গিলতে থাকে একের পর এক রাস্তা, তেমনি গিলতে থাকে
আমার চেতনাকেও।
যখন জাদুকরের আশ্চর্য জাদুবলে শহর ভুলিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে পরেছে তখন আকাশে ঝুরি ঝরি
মৌনতা নিয়ে পায়চারি দেয় আমারই অস্থির চেতনা। সে শুনতে পায় ভালোবাসা না পাওয়া ব্যার্থ
প্রেমের অজস্র কান্নাকে, যে ‘ব্লেড দিয়ে চিরছে ঘুম ও রাত’ আর তার তরল রক্ত আমাকে দিয়ে
লিখিয়ে নিচ্ছে এক নক্ষত্র উপাখ্যান। সারারাত ‘শহর, আমাদের কান্নার রঙ, অজস্র শুন্যস্থান
আমি পেরোতে না পেরে শুধু লিখে যাই, লিখে যাই মিডনাইট সিরিজ’এর এক একটা।
এভাবে আলপিনের মতো গেঁথে যাওয়া এক একটা শব্দ দাগ আমার বিধ্বস্ত চেতনাকে নতুন পথ
দেয়, নতুন লেখার রাস্তাও দেয়-
‘ছেড়ে যাওয়া লন্ঠনের সবকটি মন খারাপ শব্দ পাঠায়’ আর লুকিয়ে রাখা সুইসাইড নোটের
ইস্তাহার আমাকে বলে যায়- ‘আসলে ঘুমিয়ে পড়া বলে কিছু নেই সবই অতল’ যেন এক যাত্রা… সমুদ্রের
মতো বিস্তৃত এ যাত্রায় প্রতিটা সকালেই নতুন করে জন্ম হচ্ছে আমার।
স্বপ্নে ভেসে ভেসেই ‘বুদ বুদ কিছু ডুবুরির ঝিনুক তলা দেখে আমি পাড়ি দেব ঢেউয়ের
মাথায় আর
এই যাতায়াত আর ঘুম ও জাগরণের মধ্যবর্তী থেকে খুলে যাচ্ছে বাল্মীক রাস্তার এক দরজা-
‘দু চোখ অবশ করে নেমে আসছেন
পীর…’
সৃষ্টি হচ্ছে নতুন করে জীবন এবং জীবনও ঢুকে যাচ্ছে সেই আদি সৃষ্টিরই ভিতর।
যাত্রা পথের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, থেমে থাকা, না থামা পর্যন্ত, অজস্র অস্থিরতায়
দাঁড়িয়ে থাকা আহত সাঁকোর মতো জীবন আমি তো তোমার কাছেই বারবার আসি, তোমার পায়ের কাছে
বসে বলি –
‘সব লাইট বন্ধ হয়ে যাবার পর
কেন শুধু তমাকেই
বলে যেতে ইচ্ছে করে…’
যখন জাদুকরের আশ্চর্য জাদুবলে শহর ভুলিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে পরেছে তখন আকাশে ঝুরি ঝরি
মৌনতা নিয়ে পায়চারি দেয় আমারই অস্থির চেতনা। সে শুনতে পায় ভালোবাসা না পাওয়া ব্যার্থ
প্রেমের অজস্র কান্নাকে, যে ‘ব্লেড দিয়ে চিরছে ঘুম ও রাত’ আর তার তরল রক্ত আমাকে দিয়ে
লিখিয়ে নিচ্ছে এক নক্ষত্র উপাখ্যান। সারারাত ‘শহর, আমাদের কান্নার রঙ, অজস্র শুন্যস্থান
আমি পেরোতে না পেরে শুধু লিখে যাই, লিখে যাই মিডনাইট সিরিজ’এর এক একটা।
এভাবে আলপিনের মতো গেঁথে যাওয়া এক একটা শব্দ দাগ আমার বিধ্বস্ত চেতনাকে নতুন পথ দেয়, নতুন লেখার রাস্তাও দেয়-
‘ছেড়ে যাওয়া লন্ঠনের সবকটি মন খারাপ শব্দ পাঠায়’ আর লুকিয়ে রাখা সুইসাইড নোটের ইস্তাহার আমাকে বলে যায়- ‘আসলে ঘুমিয়ে পড়া বলে কিছু নেই সবই অতল’ যেন এক যাত্রা… সমুদ্রের মতো বিস্তৃত এ যাত্রায় প্রতিটা সকালেই নতুন করে জন্ম হচ্ছে আমার।
স্বপ্নে ভেসে ভেসেই ‘বুদ বুদ কিছু ডুবুরির ঝিনুক তলা দেখে আমি পাড়ি দেব ঢেউয়ের মাথায় আর
এই যাতায়াত আর ঘুম ও জাগরণের মধ্যবর্তী থেকে খুলে যাচ্ছে বাল্মীক রাস্তার এক দরজা-
‘দু চোখ অবশ করে নেমে আসছেন
পীর…’
সৃষ্টি হচ্ছে নতুন করে জীবন এবং জীবনও ঢুকে যাচ্ছে সেই আদি সৃষ্টিরই ভিতর।
যাত্রা পথের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, থেমে থাকা, না থামা পর্যন্ত, অজস্র অস্থিরতায় দাঁড়িয়ে থাকা আহত সাঁকোর মতো জীবন আমি তো তোমার কাছেই বারবার আসি, তোমার পায়ের কাছে বসে বলি –
‘সব লাইট বন্ধ হয়ে যাবার পর
কেন শুধু তমাকেই
বলে যেতে ইচ্ছে করে…’
এভাবে আলপিনের মতো গেঁথে যাওয়া এক একটা শব্দ দাগ আমার বিধ্বস্ত চেতনাকে নতুন পথ দেয়, নতুন লেখার রাস্তাও দেয়-
‘ছেড়ে যাওয়া লন্ঠনের সবকটি মন খারাপ শব্দ পাঠায়’ আর লুকিয়ে রাখা সুইসাইড নোটের ইস্তাহার আমাকে বলে যায়- ‘আসলে ঘুমিয়ে পড়া বলে কিছু নেই সবই অতল’ যেন এক যাত্রা… সমুদ্রের মতো বিস্তৃত এ যাত্রায় প্রতিটা সকালেই নতুন করে জন্ম হচ্ছে আমার।
স্বপ্নে ভেসে ভেসেই ‘বুদ বুদ কিছু ডুবুরির ঝিনুক তলা দেখে আমি পাড়ি দেব ঢেউয়ের মাথায় আর
এই যাতায়াত আর ঘুম ও জাগরণের মধ্যবর্তী থেকে খুলে যাচ্ছে বাল্মীক রাস্তার এক দরজা-
‘দু চোখ অবশ করে নেমে আসছেন
পীর…’
সৃষ্টি হচ্ছে নতুন করে জীবন এবং জীবনও ঢুকে যাচ্ছে সেই আদি সৃষ্টিরই ভিতর।
যাত্রা পথের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, থেমে থাকা, না থামা পর্যন্ত, অজস্র অস্থিরতায় দাঁড়িয়ে থাকা আহত সাঁকোর মতো জীবন আমি তো তোমার কাছেই বারবার আসি, তোমার পায়ের কাছে বসে বলি –
‘সব লাইট বন্ধ হয়ে যাবার পর
কেন শুধু তমাকেই
বলে যেতে ইচ্ছে করে…’
মলাটের অর্ধেক
প্রথম প্রকাশ জানুয়ারি ২০১৪
প্রকাশক মধ্যবর্তী
মূল্য ১৫ টাকা
কবিতা
অদৃশ্য হাত
সকালের গায়ে
কয়েকটা ইট পুঁতব
সাথে কিছু কারিগরী হাত
ফুরফুরে হাওয়া থেকে
জলীয় বাষ্প আর প্রজাপতির রঙ
এগুলো দিয়ে বিকেল তৈরি হবে
তারপর
একটা মূর্তি...
মিডনাইট সিরিজ :১
কিছুই হচ্ছে না জেনে
আমি রাত্রি রাত্রি চেঁচাচ্ছি
আর ক্রমশ এক পাগল এগিয়ে আসছে
আমি অন্ধকার নামক সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি
আমি অস্থির নামক বারান্দার কাছে চলে যাচ্ছি
আমার মনে হচ্ছে এই সময়
দীর্ঘদিন খামবন্দি কথাগুলোর
নিজের ভেতরে জমা অজস্র কমা, কোলোনগুলোর
উড়ে যাবার সময়
তারপর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট তারে তারে ঘর্ষণ দেখতে হবে না
আমি থাকব না জেনেও কিছু করতে পারতাম
ভেবে ছায়ার ভেতর মুখ চেপে বসে থাকার নামে
অপদস্থ হওয়া
হয়তো এসব কিছুই হত না
অজস্র ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট
সিলেবাস
আমার না দাঁড়ানো লাইনের থেকে দূরে
শুধু ‘রাত্রি রাত্রি’ গুণে যেতাম...
মিডনাইট সিরিজ : ২
নেমে আসে
রাত পায়চারি
যখন শালবনে কেঁপে ওঠে চিহ্ন
ছুঁয়ে যায় রাত্রির গার্ড
আর দু কদম থেমে নিজের ছায়ায়
ঘিলু টেনে ওঠে আচ্ছন্নতা
সিগারেট নয়... এক অন্তঃস্বর ঢুকে পড়ে।
স্বপ্নবিষয়ক
আমার ভেতর ঢুকে যায়
রুল দাগ দেওয়া আস্ত একটা ১১ পাতার বই
তার অজস্র রেফ চিহ্ন, টুকরো টুকরো কমা
আলপিনের মতো গেঁথে যেতে থাকে
তারপর যখন ঝাঁপ বন্ধ হয়
কুপি ধরিয়ে বসে পড়ে একদল সবজিবিক্রেতা
মাছওয়ালার দর দাম শুরু করে দেয়
আমার ভেতর
অন্ধকারে বসা পাঁপড়ওয়ালার চাটাই বেড়া
তেলের খরচ খুঁজতে গিয়ে
দু’রাত ফেরেনি যার বাবা
সেও হঠাৎ ফিরে আসে
‘জল চায়’
আমি এতসব সামলে
একসময় লাইট অফ করি...
দৃশ্যান্তর
হয়তো ঘুমিয়ে পড়া বলে কিছু নেই
সবই অতল
সিঁড়ি ওঠা থেকে
সিঁড়ি বেয়ে নেমে যাওয়া পর্যন্ত
সবই এক...
নিজের জন্য লেখা
অসাধারণ এক রাত্রির হাত
বাতাস
অন্যমনস্ক মৃদু পায়চারি ঢুকে পড়ছে
ফিস্ ফিস্... মনখারাপের শহর
হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছ।
দক্ষিণ আকাশে ঝুরি ঝুরি মৌনতা নিয়ে
তরুণ
গমবর্ণ মেঘ ধরতে পারেনি
ফলত দ্রিম দ্রিম
ব্লেড দিয়ে চিরছে ঘুম ও রাত
…এই তরল লাল
আস্তে আস্তে বেড়ে উঠছে
আর আমি কলম চালাচ্ছি নক্ষত্র বরাবর...
পাখিদের শোক
তিনতলা
চারতলায় স্কেল নিয়ে দাগ কাটছেন কারিগর
আর একমিটার দু’মিটার সরে যাচ্ছে
শহর, আমাদের কান্নার রঙ
ঘুমের ভেতরে মাটি মাটি গর্ত পূরণ করে
যাচ্ছে একদল লরি
আমি শূন্যস্থান পেরোতে পারছি না
হয়তো মৃতরাও পারে না
তার শেষটুকু দিয়ে
পাখিদের শোক মিটিয়ে দিতে...
তবু খড় নিয়ে ফেরে কৃষক
যাবতীয় অভিমান শেষে
ঘামের পাথর ভেঙে
শরীরে ছড়িয়ে দেয় স্মৃতির টিপসই
দু'দণ্ড শিকড়ের উদ্দেশ্য
কেন এত চিরহরিৎ জল
এত হেঁটে যাওয়া...
ভৌতিক
ক্রমশ ঈশ্বরিত দরগার কাছে চলে এসেছি
দুপুরের খুলে দেওয়া আঁচে বিষাদমন্ত্রের মতো
স্তবপাঠ... খুলে যাচ্ছে বল্মীক রাস্তার
এক একটা দরজা
দু’চোখ অবশ করে নেমে আসছেন
পীর
তার নাভিমূল থেকে ঠিকরে পড়ছে
শুক্লপক্ষের শেষ আলো আর
পরমান্ন ভেবে
তাকে খেয়ে নিচ্ছে
এই মহাশ্মশান...
2 মন্তব্যসমূহ