চেনা মুখ অচেনা কথা

 


চেনা মুখে অচেনা কথা 

এক সাহিত্য আড্ডায় প্রথম দেখি শান্তনু’কে। সালটা সম্ভবত ২০১৩ / ১৪। দিন, তারিখ মাস সেভাবে মনে নেই, তবে সময়টা বিকেল ছিল, সাথে লিক লিকে একটা কাগজ ‘অভিসন্ধি’। সাদা কালো। কোনো ঢ্যামনামো নেই, স্ট্রেট কাট একটা বৈপ্লবিক ইস্তাহার ছিল সেটা। ইসলামপুর-কোর্ট’এর সামনে সিগারেট জ্বালিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় আমাদের, পরে কাগজটা দিয়েছিলো ওঁ। বলা, চলা সবেতেই একটা দৃশ্যত স্পর্ধা নিজের অজান্তেই শান্তনু বহন করে। এবং সেটাই বাকিদের থেকে আলাদা করে ওঁ’কে। ‘অভিসন্ধি’র মতোই।

 

এইতো সেদিন, আর পাঁচটা দিনের মতোই শান্তনু’র সাথে কথা হচ্ছিল, পরে কনভার্সেশনটা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে মনে হয়েছে - এই কথাগুলো আজকের দিনে লেখালেখির সাথে জড়িত এবং না'জড়িত  প্রত্যেকটা মানুষের কাছে পৌঁছনো অত্যন্ত জরুরি।

যেহেতু কোনোরকম প্রস্তুতি নেই এই আলোচনার, তাই এটাকে সাক্ষাৎকার না বলে 'বিষাক্ত মুদ্রাদোষ' বলা ভালো।  শান্তনুর অনুমতি নিয়ে কথোপকথনটা হুবহু পাঠকের সামনে রাখা হলো-  



রথীন : কবিতা বা সাহিত্যের ক্ষেত্রে উত্তর দক্ষিন বিষয়টাকে কিভাবে দেখ?

 
শান্তনু :  কবিতা কেন কোনও ক্ষেত্রেই এই বিভাজন দেখি না।
 
রথীন : ইদানীং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ‘উত্তর’- বিষয়টা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে!
 
শান্তনু : ইদানীং না। অনেকদিন থেকেই হচ্ছে, আমি সোশাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে বলেছিলাম, যে কেউ আমার প্রোফাইল ঘেটে দেখে নিতে পারে। আর ইদানীং রাজনীতির কারণে এই বিভাজন ব্যাপক হয়েছে।
 
রথীন : একদম

শান্তনু : মনে আছে ২রা মে ইলেকশনের রেজাল্ট আউটের পর দিন ‘উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য চাই…’


এটার কথা বলছিলাম।
 
রথীন : হুম, দেখেছি, তোমাকে রীতিমতো ফলো করি।
 
শান্তনু : পুলিশও তাইই করতো পোস্টারিং এর পর।
 
রথীন : তুমি নিশ্চই শুনেছ ‘উত্তরবঙ্গ সাহিত্য আকাদেমি’র কথা, কি বলবে!
 
শান্তনু : হুজুগ, 
ওরা লিটল ম্যাগ মেলা করেছে৷ যেতে পারিনি৷ জেলায় জেলায় লিটল ম্যাগ মেলা আয়োজন করবে শুনেছি। উদ্যোগ হিসেবে নিশ্চিত ভালো। তবে এই আকাদেমির উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমি খুব ওয়াকিবহাল নই এবং খানিকটা সন্দিগ্ধও। অভিসন্ধির পোস্টারকে ঘিরে দুটো মিডিয়া হাউজ এবং পুলিশকে খেসারত দিতে হয়েছে যখন, তখন ওদের লিটল ম্যাগ মেলা। সেই সময় এবং তার পরেও এই আকাদেমি এতদ্বিষয়ক মন্তব্যে নীরব থেকেছে৷ কারণ জানা নেই। আমার সন্দেহটা এখানেই শুরু হয়েছে৷ পরবর্তীতে ওরা জন্মদিন, মৃত্যুদিন পোস্ট করেছে৷ বিভিন্ন পত্রিকার তথ্য ওদের পেজ থেকে পোস্ট করেছে৷ কাগজও হচ্ছে একটা৷ সব ঠিক আছে৷ ড্রয়িং রুমের সাজগোজ হিসেবে এ'সব প্রয়োজন হয়। কিন্তু বেডরুম কিংবা রান্নাঘর দেখতে পাচ্ছি না৷ কিছুদিন আগে আমায় ফোন করেছিল। অভিসন্ধি কবে থেকে হচ্ছে ইত্যাদি জানতে৷ আমি বলেছিলাম, এ'সব তথ্য ফেসবুকে আকাদেমির পেজ থেকে যদি পোস্ট করার থাকে, তা যেন না করা হয়৷ এই শর্তে অভিসন্ধির তথ্য দিতে আমার আপত্তি নেই৷ আর কিছু জানতে চায়নি। রেখে দিয়েছে ফোন। আর সাহিত্য আকাদেমি- সেটা হিন্দি আগ্রাসনের ধারক বাহক।
 
রথীনতবে আকাদেমি'র সাথে জড়িত কোনো মানুষ যদি আলাদা রাজ্যের পক্ষপাতিত্ব করে!
 
শান্তনু : তাহলে তো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে বলতে হবে। তবে সেটা ব্যাক্তি দৃষ্টি ভঙ্গি হবে। দলীয় নয় সম্ভবত।
এই রাজনীতি আমি ঘৃণা করি।
তা হঠাৎ এই প্রশ্ন?
 
রথীন : জানতে ইচ্ছা করল, তাই।
আচ্ছা অনেকেই অভিযোগ করেন উত্তরের সাহিত্য মহল বঞ্চিত, তোমার কি মনে হয়!
 
শান্তনু : গোটা ভারতবর্ষই বঞ্চিত। উত্তরকে আলাদা করে দেখার অর্থ, কিংবা অনেক কিছুকেই বিচ্ছিন্নভাবে দেখার অর্থ হলো, অনেক জরুরি সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়া।
কলকাতা লাগোয়া এলাকাগুলির সঙ্গে কি বঞ্চনার সম্পর্ক নেই? হতে পারে তাদের প্রেক্ষিতগুলি ভিন্ন। বিভিন্ন। যারা বঞ্চিত বলছে, তাদের কথাগুলি শোনা দরকার। কী কী ভাবে বঞ্চিত মনে করছে! দেখবে তারা প্রত্যেকেই আসলে একটা তুলনা টানছে৷ হয় কলকাতার সঙ্গে কিংবা আর কোনও মেট্রোর সঙ্গে৷ যদি এমনটা হত, ধরো, রায়গঞ্জ কলকাতা ঘেঁষা একটা শহর, তাহলে ঠিক কী এমন বদলে যেত! তেলের দাম, গ্যাসের দাম, জিনিসের দাম এ'সবে কোনও এফেক্ট পড়তো! মূল সমস্যাগুলি জীবন, চাকরি, কাজ হারানো ইত্যাদি... সে'সব থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে কেউ বা কারা বদ্ধপরিকর।
 
রথীন : উত্তরে অনেক শক্তিশালী লিখিয়ে আছেন যারা সেভাবে কখনোই হাইলাইটেড হন নি। যাদের এই কাজ করা উচিৎ তারাও করেননি, সবাই কলকাতা মুখি হয়ে আছে। কি বলবে?
 
শান্তনু : এটা আংশিক সত্য।
 
রথীন : আংশিক? একটু বিশ্লেষণ করলে ভাল হয়!
 
শান্তনুহাইলাইট মানে কী? শক্তিশালী লেখক কবিরা কি লিখতে চান, নাকি আলোর বৃত্তে আসতে চান৷ আমার ধারণা অনেকেই যথেষ্ট নির্লিপ্ত থেকেই কাজটা করে যান৷ কারণ উনি থাক বা না থাক, কাজটা থাকবে৷ আগামীতে কেউ বা কারা নিশ্চিত ভাবে আছেন, যারা আগামীতে তাদের নিয়ে কাজ করবেন। তাঁদের লেখা পত্র আগামীর কাছে প্রয়োজনীয় কিনা সেটা তো সময় বলবে।
আর কলকাতা চাকরি কিংবা ইত্যাদি সূত্রে অনেকেই যান৷ থাকেন৷ শুধুমাত্র কলকাতায় থাকবো বলে কেউ থাকেন, জানি না। উল্টোটাও তো ঘটে৷ যেমন রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজে শেষ পনেরো বছর অদ্রীশ বিশ্বাস চাকরি করেছেন৷ সাউথ পয়েন্টে আগে চাকরি ছিল ওঁর৷ তারপর রায়গঞ্জ।
 
রথীন : কজন কবি যিনি লেখেন, প্রকৃত অর্থে লেখেন। মৃত্যুর পরে তাঁর কি কিছু পাওয়ার থাকে?
 
শান্তনু : ভীষণভাবে থাকে

রথীন : যেমন
 
শান্তনু : আর্কিমিডিসের মৃত্যু নামে একটা নাটকে কাজ করেছিলাম। সংলাপে আর্কিমিডিস বলছেন, 'মৃত্যু এসে না দাঁড়ালে বোঝা যায় না, একটা মানুষ তার সময়ের জন্য, তার দেশের জন্য আসলে কতটা বেঁচে ছিল'। রবীন্দ্রনাথকে অস্বীকার করা যায়নি। জীবনানন্দ। ছেড়ে দাও তাঁদের কথা৷ ধরা যাক, নিত্য মালাকার৷ অরুণেশ ঘোষ।
 
রথীনএকশ্রেণীর মানুষ লেখেন অথচ নুন্যতম সম্মান থেকে বঞ্চিত আর একশ্রেণী মানুষ চেয়ারে বসে যথেষ্ট সুযোগ ভোগ করেন, এটা বঞ্চনা নয়?
 
শান্তনু : কে কাকে বঞ্চিত করছে?
সমস্যাটা তো সেই জীবন জীবিকারই। আমি সেই প্রশ্নের পক্ষে৷
রাষ্ট্রের কাছে মেরুদণ্ড বিকিয়ে দেওয়াকে আলোর বৃত্ত হিসেবে দেখতে চাইলে তাঁরা দেখুন, সুবোধ, জয় এঁদের নাম উচ্চারণ হলে শুধুমাত্র লেখার জন্যই উচ্চারিত হবে। আলোর বৃত্তে থাকার জন্য নয়।
 
রথীন : ওই শহরে বসে – কে কবি আর কে কবি নয়, বিষয়টা জাজ করা হয়। কি বলবে!
 
শান্তনু : যে করছে করুক না। সব বিষয়ে আমি তো জানি না। আসলে কোনটা কবিতা কোনটা নয়। কে কবি, কে নয় এই প্রশ্নগুলোই বড্ড অহেতুক৷ যে, যা বলছে বলুক৷ যা করছে করুক৷ আমার কাছে সে'সব খুব জরুরি নয়৷ আমার রুচি, মেধা যেভাবে আমাকে বয়ে বেড়াবে আমি চলবো৷ থেমেও যাব৷ কোনও চেয়ার ঠিক যদি করেই দেয়, অমুকে কবি, তমুকে নয়, করুক না৷ ক্ষমতার কাজ তো সেটাই৷ যেমন বলি, অভিসন্ধির পোস্টার নিয়ে উত্তরবঙ্গ সংবাদ যে ভাবে, যে ভঙ্গিমায় লিখেছিল... আসলে সেটা যে উত্তরবঙ্গ সংবাদ লিখেছিল তা তো নয়, তোমার আমার মতো কেউ বা কারা লিখেছিল। তো, অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায় তখন ওই কাগজেই কাজ করেন৷ উনি আমার প্রোফাইলে এসে উত্তরবঙ্গের হয়ে তর্ক জুড়ে দিলেন। এবার দ্যাখো, আমি অর্জুনের ওই সমস্ত আল বাল কথাগুলোকে কি হিসেবে দেখবো? ক্ষমতার কন্ঠস্বর হিসেবে দেখবো! 
ক্ষমতা 'ওই' ভাষাতেই কথা বলে, তা বিভিন্ন সময় দেখেছি। অর্জুন তো সেই ক্ষমতার বৃত্তকেই আলিঙ্গন করেছিল সে'সময়। এই কিছুদিন আগে আমায় মেসেজ করেছিল। লিখেছিল, 'দেখা করো৷ আড্ডা হবে'। কী পর্যায়ের ঢ্যামনা হলে এই কাজটা করতে পারে একজন৷ তো ক্ষমতা এই ঢ্যামনামিটা করে৷ করেই থাকে৷ যাকে তুমি চেয়ার বা ইত্যাদি নাম দিয়ে বলতে চেয়েছ।
আর আমি নিজের লেখার ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমার একটি লেখাও কবিতা নয়৷ হয়ে ওঠেনি। যেদিন নিজের একটা লেখা কবিতা হিসেবে চিনতে পারবো, বা দাবি করার স্পর্ধা জন্মাবে, সেদিন থেকে আর লিখবো না। আমি একটাই কবিতা লিখতে চাই৷ সেটা কেউ পড়ুক না পড়ুক৷ যায় আসে না। আর পত্রিকা একটা গোষ্ঠী। একটা রাজনীতি। শুধু লেখা পেলাম, ছেপে দিলাম করে অনেক কাগজ হয়৷ সে'সব নিয়ে আমি নিজেও খুব উৎসাহী নই আমি নিজের লেখার ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমার কাছে আমার একটি লেখাও কবিতা নয়৷ 
 
রথীন : এইযে তোমার ডেডিকেশন, একটি কাগজকে পৌঁছে দেবার, তাঁর বিনিময়ে কোনো দাবি নেই তোমার? আবাদার নেই কারোর কাছে?
 
শান্তনু : না!
 
রথীন : তাহলে ‘চরাম চরাম’, একটা ডেটল গন্ধ’, অভিসন্ধি









এইসব কেন?
 
শান্তনুতুমি চোদো কেন?
 
রথীন : সুখ, এবং অবশ্যই একটা সময় বংশ বৃদ্ধির কারণে।
তবে ইদানীং চোদা কমিয়ে দিয়েছি।

শান্তনু : কাগজ, লেখা এসবের উদ্দেশ্যও তাইই। দু'হাজার সতেরোর পর ২১শে অভিসন্ধি হচ্ছে৷ ব্যাপারটা একইরকম নয়?

রথীন : আচ্ছা এইযে বিরতি, এর পেছনের কারণটা কি জানতে পারি?
 
শান্তনু : এটা বলতে গিয়ে তোমার আগের একটা কথার প্রসঙ্গও চলে আসবে৷ মাঝে হয়ে ওঠেনি। মানে ওভাবে কারণ নেই কিছু৷ তবে, অভিসন্ধি আবার কবে হবে এপ্রশ্ন অনেকের কাছেই শুনেছি৷ এই প্রশ্নগুলো আসলে বেশ উৎসাহ দেয়। অভিসন্ধি আমাকে একটা মাটি দিয়েছে। পায়ের তলায়৷ যেখানে দাঁড়িয়ে আমি চিৎকার করার সাহস পাই।
থিয়েটারেও অনেকটা পাই৷
তবে কাগজ, থিয়েটারের চেয়ে পুরনো সঙ্গ আমার!
বলছি এত এত কথা জিজ্ঞেস করছো৷ মানে আমি কি ইন্টারভিউ দিচ্ছি কোনও?

রথীন : প্রশ্নগুলো জমে আছে তাই জিজ্ঞেস করছি, ভালো লাগছে!
কবি হিসেবে না সম্পাদক না অন্য কোনো সত্যার চিৎকার এটা?
 
শান্তনু : সম্পাদক
যেদিন একটা কবিতা লিখতে পারবো, সেদিন আমি কবি৷ এখনও পারিনি।
অভিসন্ধি আট আমার বিশ্বাস, একটা ভালো সংখ্যা হতে চলেছে৷

রথীনতাহলে এই চিৎকার কিসের?
 
শান্তনু : অনেক কিছুর। অনেক রাগ, সেক্স, আনন্দ, বিষাদ সবের, সব কথা তো ধীরে কিংবা লোয়ার অক্টেভে বলা যায় না, কখনো স্কেল কখনো ভল্যুম...

রথীন : অভিসন্ধি আট , এই সংখ্যাটাই যদি কলকাতার কোনো সম্পাদক করতো, তোমার কি মনে হয় কেমন হোতো? অথবা তুমিই যদি কতলকাতায় বসে কাজটা করতে কেমন হতো?
 
শান্তনু : কাগজ তো শুধু ছাপা নয়, ভাবনা।
ওদিকে কাগজ, ছাপার মান নিশ্চিতভাবে ভালো তবে আমি তো রায়গঞ্জে বসেই অভিসন্ধির সব সংখ্যা করেছি, করছিও৷ আলাদা করে মনে হয়নি কখনো এখানে না করে ওখানে করলে কী হত না হত, মনে হয়নি।
 
রথীন : কবিতার থেকেও গদ্য বা টেক্সট বলা ভালো তোমার উচ্চারণ’এর ভক্ত বেশি। এই উচ্চারণ কি কোনো পলিটিকাল ভাবনা নাকি নিছক সম্পাদকের?
 
শান্তনু : তুমি ফেসবুকের কথা বলছো। কজন পড়ে লাইক করে জানি না। কমেন্ট যারা করে তাদের বক্তব্য থাকে। সমর্থন বেশী থাকে, সমালোচনা কম। দলীয় রাজনীতি আর রাজনীতি আমার কাছে ভিন্ন দুটি ভাবনা। সম্ভাবনাও। রাজনীতি চেতনাহীন কোনও লেখা হয় না। হয়নি৷ আমার ক্ষেত্রে সম্পাদক হিসেবে হোক বা নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে লেখা হোক, সে সবই তো আমার রাজনীতি বোধ কিংবা আমার দেখার বাইরে নয় কিচ্ছু।
 
রথীন : তুমি তো বামপন্থী?

শান্তনু : হ্যাঁ
 
রথীন : গত ইলেকশনে তোমায় ক্যাম্পেইন করতেও দেখা গেছে, ‘অভিসন্ধি কি এর জন্য কোথাও ভুক্তভোগী?
 
শান্তনু : না। 
অভিসন্ধি নিয়ে যে নেতারা বক্তব্য রেখেছে তাদের মধ্যে সিপি আই (এম)-এর জেলা সম্পাদকেরও মন্তব্য ছিল। এবং তিনিও নাকি লিটল ম্যাগের কর্মী ছিলেন৷ অনেকেই তেমনটা বলেন৷ অভিসন্ধির পোস্টার তো ইলেকশন ক্যাম্পেন করতে নেমেছি তার আগের ইস্যু। পোস্টারিং'টা অভিসন্ধির প্রচার অবশ্যই। এবং বললাম যে একটা কাগজ মানে রাজনীতি বহির্ভূত নয়। বরং ভীষণরকম রাজনীতি জড়িয়ে থাকবে তার সঙ্গে৷
পোস্টারে আসলে অনেক প্রশ্ন ছিল। সে'সব জানিয়েছিলাম পুলিশকে।
 
রথীন : সংখ্যার কতো কপি করেছ?
 
শান্তনু : ৫০০ বা ৬০০
 
রথীন : রাজধানীর দিক থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছ?

শান্তনু : আমার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রি-বুকিং হয়েছে৷ চেন্নাই, মুম্বাই, দিল্লি, কলকাতা, বাংলাদেশ, টরেন্টো, তাইওয়ান... এই বঙ্গের বিভিন্ন জেলা...
সর্বত্র পৌঁছে দিতে পারবো কিনা জানি না

রথীন : ফ্রীতে কতো কপি যাবে?
 
শান্তনু : সৌজন্য সংখ্যা ছাড়া এক কপিও না
 
রথীন : এখন ই-ম্যাগাজিন, ওয়েবজিন’এর চল, সব কপি বেরিয়ে গেলে কি এর ই-ভার্শন করবে?
 
শান্তনু : না, ভাবিনি।
অভিসন্ধি ওয়েব করবো৷ ইচ্ছে আছে, সম্ভবত পূজোর দিকে।
প্রিন্ট বন্ধ হবে না।
 
রথীন : আগাম শুভেচ্ছা!
আগামীতে কোনো কবিতার বই?
 
শান্তনু : পাণ্ডুলিপি সাজাচ্ছি, গদ্য কবিতা মিলেমিশে। একে 'কদ্যগ্রন্থ' বলতে পারো।

রথীন : অভিসন্ধি’র কোনো কম্পিটিটর ?

শান্তনু : নাহ
কোনো কাগজের কম্পিটিটর হয় কি?
অভিসন্ধির কম্পিটিটর অভিসন্ধি

রথীন : ভেতরের কথা এসব, আঁচ পাওয়া যায়, কিন্তু বলা যায় না।
তুমি সম্পাদনার ক্ষেত্রে কাউকে ফলো করো?
 
শান্তনু :  নিজেকে ফলো করি

রথীন : প্রিয় কবি?
 
শান্তনু : বলতে গিয়ে অনেক নাম ছাড়া পড়বে - রমেন্দ্রকুমার আচার্য চৌধুরী, সজল বন্দ্যোপাধ্যায়, উৎপল কুমার বসু, রাণা রায়চৌধুরী, রঞ্জন আচার্য, মৃন্ময় ভৌমিক, অমিতাভ মৈত্র, সোনালী চক্রবর্তী, তানিয়া চক্রবর্তী, আরও অনেকে আছে৷ ওঁদের পড়ি৷ দেবায়ুধ...
 অনেক অনেকে।
 
রথীন : সবাইতো প্রায় দক্ষিণের!
 
শান্তনু : মৃন্ময় ভৌমিককে আমি দক্ষিণ ভাবি না, মৃন্ময়দার চর্চার একটা বড় সময় বালুরঘাটে। রাণাদা গ্রামে বেড়ে উঠেছে। এর আগে নিত্য মালাকারের কথা বলেছিলাম। অরুণেশ ঘোষের কথা বলেছি। রঞ্জনদা থাকেন পুরুলিয়া৷ সেখানকারও সমস্যা আছে৷ উত্তর দক্ষিণ হেন তেন বিভাজনে অভ্যস্ত নই।
সেবন্তী ঘোষ, অনুরাধা কুণ্ডা, ওঁদের কথাও বলবো। তারকেশ্বরের সুজিতদা, মানসদা, আমার শহরের ঈশিতা দে সরকার- অনেককে পড়ি। আরেকজনের কথা বলবো৷ অভিসন্ধির এই সংখ্যা দিয়েই ওর আত্মপ্রকাশ৷ গদ্য। ওকে পড়ার জন্য মুখিয়ে রাখি নিজেকে৷ জানি না কদ্দিন লিখবে৷ তবে যদ্দিনই লিখুক, অপেক্ষায় থাকবো৷ কৃশানু ভট্টাচার্য৷
ভালো লাগে ইমতিয়াজ মাহমুদ - লোকটা লেখে৷ আমার বিশ্বাস, না লিখলে খুনি হত




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ

Tanmay Basak বলেছেন…
পড়লাম। শুভেচ্ছা শান্তনুকে। দীর্ঘ একটা রক্তকরবীর জন্য
Unknown বলেছেন…
Samvoboto, hungry'der kotha egulo. Ei somoy ei vashay khub kauke kotha bolte dekha jay na.
Unknown বলেছেন…
Shantonu babu, zekono sthaner janojatir unnoti, tader khaO pora, karmo sangathan, nischit nahole desher chinta asbe kotha theke. Uttorer cha bagan gulo te ekbar ghure jan, kochu sheddho, dheki shak diye du mutho kheye jan. Apni shikkha, chakri, petrol zabotiyo bishoyok bolechhen, tobe segulo sobii dhoni bektider sharthe bebohrito. Ar banchona ki seta kolkatay thaka manushera ki bujhbe. Oder kachhe uttorbango manei garomer chhuti, pahar duars bon jangol. Thak ar bolbo na.