চন্ডালের ডায়েরি
দিব্যেন্দু স্বর্ণকার
প্রথম প্রকাশ ঃ ফেব্রুয়ারি, ২০১১গ্রন্থস্বত্ব ঃ কাকলি সরকার
প্রচ্ছদ ঃ উত্তীয় মণ্ডল
প্রকাশক ঃ সূর্যাবর্ত প্রকাশনী
মূল্য ঃ ৩০ টাকা
শূন্য দশক'এর কবি দিব্যেন্দু স্বর্ণকার, শিক্ষতার সাথে যুক্ত, দক্ষিন দিনাজপুর
জেলা’র প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম, বর্তমানে মালদার বাসিন্দা। বাংলার ছোটো বড়ো বিভিন্ন
কাগজে কবিতা ও গদ্য লেখার পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের সাথে যুক্ত, কবি নিজেকে লুকিয়ে রাখতেই
স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। ইতিমধ্যে দিব্যেন্দু’র আট’টি বই প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকের জন্য
কবির দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘চন্ডালের ডায়েরি’
থেকে কিছু কবিতা রাখা হোলো।
বাবা
কাঁথা দিয়ে বানানো। তাপ্পি মারা। বিষটি এলে।
কাঠ বাঁটঅলা ছাতা।
সেই গাছ।
যার হাত ধরে দাঁড়াতে শিখেছিলাম
ক্যানভাস
ছুটে যাচ্ছে ট্রেন। এদিকে সেদিক উড়ছে…
অজস্র মনখারাপ রঙ ঘুড়ি।
মা’র হাত ধরে। পেরোতে চাইছে স্কুল বালক।
মফস্সল
দল বেঁধে ভিজিয়ে দিচ্ছে…
মফস্সল ঘাসে দাঁড়িয়ে থাকা সাইকেল।
ছেলেপেলের মতো। হল্লা করতে-করতে –
সাঁওতাল পাড়া ফিরে যাচ্ছে পাখিরা…
যেখানে বাঁশঝাড়। একটু বাদে হোঁচট খাবে।
অন্ধকার।
রেল কলোনি
গণহত্যা জন্য নেমেছিল রাস্তায়…
তাদের ডেকে নেব। রেল কলোনি
বলবো দেখুন-কীভাবে এখানে নামে সন্ধ্যা!
ভাললাগা
ভাঙা শরীরের মতো অভিনন্দন।
অনাগত স্বপ্ন। ফিসফাস রাতভর…
অখ্যাত মফস্সল।
যে কুড়িয়ে আনত ভাললাগা। ছিঁড়ে যেত।
ভারাক্রান্ত আঁচল।
ভারাক্রান্ত আঁচল।
তালগাছ
আস্তে-আস্তে হাঁটছিস আর পেছন ফিরে তাকাচ্ছিস।কোনও লাভ নেই। মহিপুর মাঠ।
মাঝখানে হঠাৎ তালগাছ।
একা একা দাঁড়িয়ে থাকার সাহস পায়
কোথ্থেকে ?
আশ্রয়
একটি হলুদ পাতা। উড়ে আসে। পায়ের কাছে হঠাৎ।
চুপিচুপি বলে, ‘আমার কিচ্ছু লাগবে না’
স্বভাব ও শরীর মেনে নিতে পারিনি।
সহ্য ক্ষমতা বিষয়ে…
কতটা আনাড়ি ছিলাম।
মন
তৃপ্তিদি’র ঘর। বারান্দা। নগ্ন উঠোন।
ভাঙা টুকরো টাকরা ছড়িয়ে এদিক ওদিক…
এতো তাড়াতাড়ি মন
ভাঙে না কিন্তু।
অন্ধ ঈশ্বর
রঙ পেন্সিল নিয়ে ফিরছ…
পোড়া মবিল মাখা শার্ট। গিলে ফেরে বাংলা।
দু-জনের মধ্যে। ট্রাফিক পুলিশ হয়ে যান।
সুধীর দা
প্রাইম্যারী ক্লাস। ছুটে যেতাম বার-বার…
একদিন। অলীক পাঠশালা পড়াতে গেলেন তিনি।
রেখে গিয়েছিলেন। ধারাপাত ধুতি। শ্লেট ছাতা।
আর হাওয়ায় দুলতে থাকা। কচি।
দেবদারু ডালের মতো সংসার!
সন্ন্যাসী
সংগ্রহ করো বিভাজিত সরল রেখা।
ঈশ্বরের মতো। আমাকে ঘুমিয়ে যেতে দাও।
কেননা, মৃত ছাড়া কেউ –
সন্ন্যাসী নয় পৃথিবীতে।
চন্ডালের ডায়েরি
যা করছি নিজের ইচ্ছেয়… কিংবা কোনও অন্ধ নাবিক।
কান ধরে করিয়ে নিচ্ছেন সব। কিছু অঙ্কের সূত্র।
আবিষ্কার হল না আজও।
সাতশো বছর আগে পূর্ব পুরুষ। যে হাতে মরা পোড়াতেন।
সে হাত দিয়ে কেন?
2 মন্তব্যসমূহ